নতুন করে মাসিক ১০০০ টাকা করে পেনশন দেওয়া শুরু করছে রাজ্য সরকার | West bengal government Big Scheme 

নতুন করে মাসিক ১০০০ টাকা করে পেনশন দেওয়া শুরু করছে রাজ্য সরকার | West bengal government Big Scheme


সবেমাত্র বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজা শেষ হয়েছে। সামনেই আসতে চলেছে আলোর উৎসব দীপাবলী। এই উৎসবের মরশুমে আরও দ্বিগুন আনন্দ ছড়িয়ে দিতে বাংলার ৬০ উর্ধ্ব বয়স্ক নাগরিকদের উদ্দেশ্যে এক দুর্দান্ত খুশির খবর ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে আর মাত্র হাতে গোনা কয়েকটি দিনের অপেক্ষা, তার পরেই নতুন করে পশ্চিমবঙ্গের ১.৫ লক্ষ বয়স্ক গ্ৰাহককে বার্ধক্য ভাতার আওতায় ১০০০ টাকা করে প্রতি মাসে পেনশন দেওয়া হবে।

সরকার সূত্রে জানা গিয়েছে যে, দুর্গাপুজোর আগেই এক সমীক্ষার মাধ্যমে স্থির করা হয়েছে যে নতুন করে কাদের নাম বার্ধক্য ভাতার তালিকা ভুক্ত করা হবে। আর সেই সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী নির্বাচিত গ্ৰাহকদের নাম বার্ধক্য ভাতার তালিকা ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার।

জয় বাংলা প্রকল্প কি?

রাজ্যবাসী দের আর্থিক সাহায্য প্রদানের উদ্দেশ্যে একাধিক জনকল্যাণমূলক প্রকল্প চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এইসব প্রকল্প গুলিকে একই ছাদের তলায় আনতে ২০২১ সালে “জয় বাংলা” নামে একটি বড়ো প্রকল্পের সূচনা করে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই “জয় বাংলা” প্রকল্পের অধীনে যে যে পেনশন স্কিম গুলি রয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- বিধবা ভাতা, বার্ধক্য ভাতা, জয় জোহার, তফসিলী বন্ধু, কৃষকদের জন্য ভাতা, প্রবীণ তাঁতিদের জন্য ভাতা, প্রবীণ শিল্পীদের জন্য ভাতা, প্রবীণ মৎস্য চাষিদের জন্য ভাতা ইত্যাদি।

উল্লেখ্য এই প্রতিটি পেনশন স্কিমের মাধ্যমে প্রত্যেক গ্ৰাহককে প্রতি মাসে ১,০০০ টাকা করে পেনশন দেওয়া হয়। বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গের ১ কোটি জনগণ এই পেনশন গুলির সুবিধা ভোগ করছেন। এই ১ কোটি জনগণের মধ্যে ২২ লক্ষ ১১ হাজার গ্ৰাহক বার্ধক্য ভাতা, বিধবা ভাতা সহ অন্যান্য সব বিশেষ ভাবে অক্ষম নাগরিকদের জন্য তৈরি করা পেনশন স্কিমের আওতায় মাসিক ভাতা পান।

বার্ধক্য ভাতাতে কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকারের আর্থিক অবদান কতখানি?

ন্যাশনাল সোস্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রোগ্ৰাম এর মাধ্যমে এই বার্ধক্য ভাতার আওতায় প্রাপ্য বরাদ্দ টাকার খুব কম পরিমাণ অংশ প্রদান করে কেন্দ্রীয় সরকার। এই ভাতার মাধ্যমে দেওয়া প্রতিটি গ্ৰাহককে দেওয়া ১,০০০ টাকার মধ্যে ৩০০ টাকা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার এবং বাকি ৭০০ টাকা দেয় রাজ্য সরকার। তবে যে সব গ্ৰাহক দের বয়স ৮০ বছরের উর্ধ্বে তাদের মোট প্রাপ্য টাকার ৫০০ টাকা প্রদান করে কেন্দ্রীয় সরকার।

প্রত্যেক বছর বছর এই বার্ধক্য ভাতা প্রকল্পের আওতায় থাকা গ্ৰাহকদের পরীক্ষা করা হয়। রাজ্য সরকারের কর্মকর্তারা নিজেরা এই সব গ্ৰাহকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে পরীক্ষা করেন যে তারা এখনও বেঁচে আছেন কিনা অথবা অন্য কোনো রাজ্যে চলে গিয়েছেন কিনা। এই ভাবে পরীক্ষা করেই গত বছর জানা গিয়েছে যে বার্ধক্য ভাতা প্রকল্পের গ্ৰাহকদের মধ্যে অনেকেই মারা গেছেন ও অনেকে আবার অন্য রাজ্যে চলে গিয়েছেন। যার ফলে অনেক গুলি শূন্যস্থান তৈরি হয়েছে। আর সেই কারনেই নতুন করে ১.৫ লক্ষ মানুষকে বার্ধক্য ভাতার আওতায় আনা সম্ভবপর হয়েছে।

বার্ধক্য ভাতার গ্ৰাহকদের কিভাবে যাচাই করা হয়?

প্রত্যেক বছর রাজ্য সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা নিজেরা বার্ধক্য ভাতা প্রকল্পের আওতায় থাকা প্রতিটি গ্ৰাহকের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে পরিদর্শন করেন। সেখানে প্রতিটি গ্ৰাহকের ছবি জিও ট্যাগিং করে পরীক্ষা করা হয়েছে। এই পরীক্ষার ফলাফলের উপর ভিত্তি করেই নতুন করে ১.৫ লক্ষ নাম এই প্রকল্পের আওতায় আনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শুধু তাই নয় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করছে রাজ্য সরকার।

 

Leave a Comment