SSC: ‘যোগ্য’ শিক্ষকদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ পেল, তালিকায় ঠাঁই পেলেন কতজন? জেনে নিন বিস্তারিত!

দীর্ঘদিন ধরে কলকাতার রাজপথে চলছিল আন্দোলন, আইনি লড়াই এবং চাকরি অনিশ্চয়তা নিয়ে যোগ্য প্রার্থীরা তাদের চাকরি বাঁচাতে দাবি জানিয়েছিলেন যোগ্যদের লিস্ট বের করার জন্য। অবশেষে আন্দোলন সফল হলো, বের হলো যোগ্যদের লিস্ট। দীর্ঘদিন পর অবশেষে অনেক চিন্তা কাটিয়ে যোগ্য প্রার্থীরা স্কুলে ফিরতে পারবেন। পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)-এর নিয়োগ দুর্নীতি মামলা ঘিরে যে প্রায় ১৯ হাজার (১৮,৪১৮) শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি বাতিল হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে থেকে ‘সততা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে’ চিহ্নিত করা হল প্রকৃত যোগ্যদের। প্রকৃত যোগ্যদের আবারো স্কুলে ফেরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে সকলেই নয়, তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন অনেকে। যারা তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন তাদের পুরোপুরি স্কুলে যাওয়ার রাস্তা বন্ধ।

কীভাবে তৈরি হল চূড়ান্ত তালিকা?

প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন তথ্য পর্যালোচনা করে পশ্চিমবঙ্গ স্কুল সার্ভিস কমিশন ১৮,৪১৮ জনের মধ্যে যারা অবৈধ বা সন্দেহজনকভাবে চাকরিতে যুক্ত হয়েছিলেন তাদের বাদ দিয়ে ১৭,২০৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার একটি বৈধ তালিকা তৈরি করেছিল। ইতিমধ্যেই এই তালিকায় যাদের নাম রয়েছে তাদের তথ্য মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সুপ্রিম কোর্টে পেশ করবেন। আদালত ইতিমধ্যেই সেই তালিকায় সম্মতি জানিয়েছেন এবং পড়ুয়াদের স্বার্থে এই সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্কুলে যোগ দিতে বলেছেন তারা আগের নিয়মে বেতনও পাবেন। তবে কোর্টের এই অনুমতি আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্তই বৈধ থাকবে। এর মধ্যেই আবার স্কুল সার্ভিস কমিশনকে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু করতে হবে।

নতুন তালিকায় কতজন পেলেন চাকরির সুযোগ?

স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাথমিক তদন্ত অনুযায়ী চূড়ান্ত বাছাই এর পরে ১৮০৩ জনকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, নতুন চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পেয়েছেন ১৫,৪০৩ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। মঙ্গলবার রাত থেকেই এই তালিকা রাজ্যের বিভিন্ন জেলার শিক্ষা দফতরে পাঠানোর প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে স্কুল সার্ভিস কমিশনের তরফ থেকে।

২৬ হাজার চাকরি বাতিলের পর প্রেক্ষাপট

উল্লেখযোগ্য, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গের প্রায় 26000 শিক্ষক-শিক্ষিকা গ্রুপ সি ও গ্রুপ ডি কর্মী পদে শিক্ষা কর্মীদের চাকরি বাতিল করে দেওয়া হয়েছিল। আদালতের দীর্ঘ শুনানি হয় কিন্তু শেষ পর্যন্ত যোগ্য অযোগ্য পৃথক করতে পারেনি আদালত। এর মূলে বলা হয়েছে এসএসসি তরফ থেকে সঠিক তথ্য প্রদান করা হয়নি আদালত কে। আদালতের বক্তব্য ছিল, যখন ‘যোগ্য’ ও ‘অযোগ্য’ প্রার্থীদের মধ্যে স্পষ্ট বিভাজন করা সম্ভব নয়, তখন পুরো নিয়োগ প্রক্রিয়া-ই বাতিল করা ছাড়া উপায় থাকে না। সেই ঘটনার পরই মধ্যশিক্ষা পর্ষদ ও SSC মিলে নতুন করে যাচাই করে এই যোগ্যদের তালিকা প্রস্তুত করে।

তবে এই চূড়ান্ত তালিকায় নাম থাকলেই যে শিক্ষকদের চাকরি স্থায়ী সেটা বলা যায় না। কারণ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫-এর মধ্যে নতুন করে আবার নিয়োগ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়োগ সম্পন্ন করতে হবে তবে নতুন নিয়োগে যদি কেউ স্থান না পায় তাহলে তার চাকরির ভবিষ্যৎ আবার অনিশ্চয়তার মুখে পড়তে পারে। তবে আপাতত এই ১৫,৪০৩ জন শিক্ষক-শিক্ষিকার কাছে এটি নিঃসন্দেহে একটি বড় স্বস্তির খবর।

Leave a Comment